ব্লগিং এর ইতিহাসঃ ইন্টারনেট জগতে “ব্লগ” এর বয়স ১৫ পার হয়েছে। Blog শব্দটির আবির্ভাব Weblog থেকে। Weblog শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয় দশ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর। শব্দটির স্রষ্ট্রা মার্কিন নাগরিক জন বার্জার। এর ঠিক দু’বছর পর ১৯৯৯ সালের এপ্রিল এবং মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে পিটার মহলজ নামে এক ব্যাক্তি Weblog শব্দটিকে ভেঙ্গে দুই ভাগ করেন- Web এবং Blog এর পরই সারা বিশ্বব্যাপী Blog বা ব্লগ জনপ্রিয় হতে শুরু করে।
ব্লগিং কি? এবং কেন করবেন?
বাংলায় পূর্ণঙ্গ ব্লগিং গাইড
ব্লগিং কিভাবে করবেন। বিস্তারিত বাংলায়
টপিক সূচি
ব্লগ কি?:
ব্লগিং কেন করবেন?
ব্লগার কে বা কারা ?
ব্লগিং এর প্রকারভেদ :
ব্লগিং করার কারণ:
ব্লগিং করে কি হবে :
ব্লগিং এর কিছু তথ্য:
ব্লগ কি
ব্লগ শব্দটি ইংরেজ Blog এর বাংলা প্রতিশব্দ, যার শব্দের অর্থ অনেকটা ব্যক্তিগত অনলাইন দিনলিপি বা ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগের একটি মাধ্যম। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট পোষ্ট করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেন এবং সেখানে তাদের মন্তব্য প্রকাশ করতে পারে।
এছাড়াও সাম্প্রতিক কালে ব্লগ ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতা ও অনলাইন আয়ের একটা মাধ্যম হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক ঘটনা সমূহ নিয়ে এক বা একাধিক ব্লগাররা এটি নিয়মিত আপডেট করেন। এখন ব্যক্তিগত ডায়রীর পরিবর্তে ব্লগ একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
অনেকে ব্লগ এবং ওয়েবসাইট এর পার্থক্য বোঝেন না। ওয়েব সাইট থেকে ব্লগের মূল পার্থক্য হল ওয়েব সাইট আপডেট করা হয় অনিয়মিত ভাবে অপরদিকে ব্লগ আপডেট করা হয় নিয়মিত ভাবে। এমনকি কিছু কিছু ব্লগ প্রতি মিনিটে আপডেট করা হয়।
কোন একটি নির্দিষ্ট ওয়েব সাইটে কোন বিষয়কে পাঠকদের মতামত প্রদানের জন্য তুলে ধরাকে ব্লগিং বলা হয়। ব্লগিং বিষয়টা যদি সংক্ষেপে বলি তাহলে বলব বিভিন্ন ব্লগে বা ওয়েভ সাইটে যা লেখা লেখি হয় তাই হল ব্লগিং । ব্লগিং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হতে পারে, যেমন রাজনীতি, সাহিত্য, টেকনোলজি, ভ্রমণ কাহিনী, আপনার জীবনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা একটি ডায়েরির মত সব কিছু গুছিয়ে রাখা, এবং তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান সম্বন্ধে লিখা ইত্যাদি।
ব্লগিং কেন করবেন
ব্লগ বা ব্লগিং শব্দটি শুনে নাই এমন লোকের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে অনেক কম বলে আমি বিশ্বাস করি। উন্নত দেশ গুলোতে ব্লগিং খুব জনপ্রিয় একটা পেশা। ব্লগিং নিয়ে লেখাপড়া করে এবং ইনকাম করে। প্রায় সব শ্রেণীর পেশার মানুষ উন্নত দেশগুলোতে ব্লগিং এর সাথে জড়িত।
আবার কেউ প্রধান ইনকাম সোর্স হিসেবে জীবন যাপন করে। তবে এই ব্লগিং নিয়ে বাংলাদেশে কিছু বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে। অনেকে আবার ব্লগ বা ব্লগিং সম্পর্কে তেমন কিছু জানেও না। আমি চেষ্টা করবো সবার জন্য ব্লগিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার।
ব্লগার কে বা কারা
যারা ব্লগিং করে বা যারা ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েভ সাইটগুলোতে লেখালেখি করে এবং এই ব্লগ গুলো যারা বানায় তারাই হচ্ছে ব্লগার অর্থাৎ আমি একটু পরিস্কার করি, যিনি ব্লগ তৈরী করে ব্লগে পোস্ট করেন বা বিভিন্ন লেখা লিখি করেন তাদেরকেই বলা হয় ব্লগার।
ব্লগিং কি? এবং কেন করবেন?
(Blogging Tips) কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন?
ব্লগিং এর প্রকারভেদ
ব্লগ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে নিচে কয়েকটি ব্লগ প্রকারভেদ আমি আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম-
ব্যক্তিগত ব্লগ : নিজের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে লেখালেখি অথবা নিজের জ্ঞানকে অন্যের কাছে তুলে ধরার জন্য যে ব্লগ তৈরী করা হয় তাই ব্যাক্তিগত ব্লগ ।
নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ব্লগ: এই ধরনের ব্লগ সাধারণ বেশি দেখা যায় যেমন টেকিব্লগ, ফটো ব্লগ, আর্ট ব্লগ, ভিডি ও অডিও গানের ব্লগ, বিনোদন মূলক ব্লগ (মুভি এবং নাটক ব্লগ গুলো হয়) (এই ব্লগিং এর মাধ্যমে সাধারণত মানুষ ইনকাম করে।)
কোম্পানী বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ: বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিজেদের যাবতীয় তথ্য নিয়ে গঠিত ব্লগ হল কোম্পানী বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ ।
সামাজিক ব্লগ: সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মানুষের আচার আচরণ চলাফেরা সামাজের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে তৈরী ব্লগ গুলো হল সামাজিক ব্লগ ।
ব্লগিং করার কারণ
আপনি যদি গুগলের সার্চ বক্সে কোন কিছু লিখে খুজেন তাহলে ঐ বিষয়ের উপর লেখা অনেকগুলো সাইট বা ব্লগ পাবেন যা পরে আপনি উপকৃত হবেন বা অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন। এমন ভাবেই ধরুন আপনি কোন বিষয়ে ভাল জানেন আবার তা অন্য মানুষ জানলে তাদের উপকার হবে তাই আপনি ব্লগিং দ্বারা পৃথিবীর মানুষদের জানাতে পারেন আপনার সেই বিষয় সম্পর্কে। এতে করে তারা উপকৃত হবে।
আবার অনেক ব্লগার আছে তারা শুধু তাদের শখের বিষয় নিয়ে ব্লগিং করে থাকে। তাদের নিজেদের জীবন কাহিনি অন্যের সাথে শেয়ার করে মজা পায়। যেমন আমি ব্লগিং করতেছি যারা ব্লগিং-এ নতুন তারা এই ব্লগ থেকে কিছু জানার জন্য। তাই আপনিও শখের বশেই হোক বা অন্যদের কোন কিছু জানানোর জন্য বা শিখানোর জন্য ব্লগিং করতে পারেন।
অনেক ব্লগার আছে যারা সামাজিক সম্মানের জন্য বা যোগাযোগের জন্য ব্লগিং করে থাকে। তবে বর্তমানে গুগল আডসেন্সের কারণে ৮০% ব্লগার তাদের ব্লগ থেকে ইনকামের জন্য তৈরি করে।
বর্তমানে ব্লগিং এর মাধ্যমে অনলাইনে আয় করা সম্ভব, বিশেষ করে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ব্লগিং করে বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেল লিখে ইনকাম করছে কিন্তু এই আয় এর পিছনে তাদের রয়েছে মহান ইচ্ছাশক্তি এবং পরিশ্রম।
ব্লগিং করে কি হবে
আপনি যদি বলেন ব্লগিং করে কি হবে? ব্লগিং করলে লাভতো আছেই কিন্তু এখানে আপনাকে আগে ঠিক করতে হবে আপনি বাংলায় ব্লগিং করবেন না ইংরেজীতে। আপনি যদি বাংলায় ব্লগিং করেন তাহলে লাভ আছে কিন্তু একটু কম। এতে আপনি ভাল একজন লেখক হতে পারেন এবং অনলাইন ভিত্তিক সাংবাদিকতায় চান্স পেয়ে যেতে পারেন। এছাড়া ভার্চুয়াল জগতে আপনার নাম হবে যা আপনি পরিচিতি সুনাম বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবার আপনার ব্লগ যদি নামকার হয়ে উঠে তাহলে বিভিন্ন কোম্পানির ( ক্লিকবিডি, এখনি.কম, আজকেরডিল.কম ইত্যাদি) এডস আপনার ব্লগে দিয়ে প্রতিমাসে মুটামুটি কিছু টাকা আয় করতে পারবেন। এছারাও বিভিন্ন এডস কোম্পানিতো (গুগল এ্যাডসেন্স, ইনফোলিঙ্কস, ক্লিকসোর) আছেই। আসলে বাংলা ব্লগের মাধ্যমে আয় করা একটু কঠিন।
আর আপনি যদি ইংরেজীতে ব্লগিং করেন তাহলে ভাল লেখক হওয়া থেকে শুরু করে সুনাম এবং আয়ের রয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা। এখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্লগ লিখে বাহারি পণ্যের বিজ্ঞাপন ( আপনার ব্লগ যদি নামকরা ব্লগ ও সনামধন্য হয়) এবং বিভিন্ন নামকরা অনলাইন এডস কোম্পানির (গুগল এ্যাডসেন্স, ইনফোলিঙ্কস, ক্লিকসোর) পাবলিশের মাধ্যমে প্রচুর টাকা আয় করতে পারেন।
এছাড়াও আছে এফিলিয়েশনের মাধ্যমে আয় । তাছাড়া অনলাইনের জনপ্রিয়তার সাথে সাথে মানুষ ব্লগিং এ খুব বেশি ঝুকে পড়ছে।
পরিশেষে, ব্লগিং একটি শক্তিশালী মিডিয়া বা গণমাধ্যম এর সাহায্যে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। ব্লগিং এর ফলে প্রত্যেক দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন ব্যাপারে অভাবনীয় পরিবর্তন আসছে। এর সঠিক প্রয়োগে আমাদের সকলের জন্য সুফল বয়ে আনবে ।
বাংলায় পূর্ণঙ্গ ব্লগিং গাইড
ব্লগিং এর কিছু তথ্য
ইন্টারনেট জগতে “ব্লগ” এর বয়স ১৫ পার হয়েছে। Blog শব্দটির আবির্ভাব Weblog থেকে। Weblog শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয় দশ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর। শব্দটির স্রষ্ট্রা মার্কিন নাগরিক জন বার্জার। এর ঠিক দু’বছর পর ১৯৯৯ সালের এপ্রিল এবং মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে পিটার মহলজ নামে এক ব্যাক্তি Weblog শব্দটিকে ভেঙ্গে দুই ভাগ করেন- Web এবং Blog এর পরই সারা বিশ্বব্যাপী Blog বা ব্লগ জনপ্রিয় হতে শুরু করে।